প্রকাশিত:
১০ জুন ২০২৪, ১৪:৫১
দক্ষিণ কোরিয়ার অধিকারকর্মীদের ইউএসবি স্টিকে কে-পপ ও কে-ড্রামা বহনকারী বেলুন পাঠানোর জবাবে ফের ময়লাভর্তি বেলুন পাঠাল উত্তর কোরিয়া। কিম জং উনের প্রভাবশালী বোন সিউলকে সীমান্তজুড়ে প্রচার বন্ধ করার জন্য সতর্ক করার পরেও উত্তর কোরিয়া আরো শত শত বর্জ্য ভর্তি বেলুন দক্ষিণ কোরিয়ারি দিকে উড়িয়ে দিয়েছে।
পিয়ংইয়ং আন্ত-কোরিয়ান সীমান্তজুড়ে ৩০০ টিরও বেশি বর্জ্য-বোঝাই বেলুন পাঠিয়েছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী আজ সোমবার (১০ জুন) জানিয়েছে। সিউলের জয়েন্ট চিফস অভ স্টাফ (জেসিএস) রবিবার (৯ জুন) জানিয়েছে, শনিবার রাত থেকে আবর্জনার ব্যাগভর্তি প্রায় ৩৩০টি বেলুন পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
এর মধ্যে ৮০টি বেলুন দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে এসে পড়েছে।
দক্ষিণে পাঠানো সর্বশেষ বেলুনগুলোতে শুধুমাত্র ময়লা কাগজ এবং প্লাস্টিক রয়েছে বলে সিউলের জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ (জেসিএস) বলেছেন। এর আগে, গত মে মাসের শেষ দিকে কমপক্ষে ২৬০টি বেলুনের সঙ্গে মানুষের মলসহ ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি ব্যাগসহ বেলুন দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠায় উত্তর কেরিয়া। সে সময় দক্ষিণ কোরিয়ার দেশটির ৯টি প্রদেশের ৮টিতেই ময়লাসহ উড়ে আসা বেলুন পাওয়া গেছে।
এদিকে জবাবে উত্তর কোরিয়াকে লক্ষ্য করে লাউড স্পিকারে সম্প্রচার শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। রবিবার (৯ জুন) তারা এ সম্প্রচার করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। ময়লাবাহী বেলুন পাঠানোর বিষয়ে উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। সিউল বলে আসছিল, যদি এগুলো পাঠানো বন্ধ না হয় তাহলে বড় লাউড স্পিকার থেকে উত্তরকে লক্ষ করে ‘প্রপাগান্ডা’ বাজানো হবে।
অবশেষে উত্তর কোরিয়া আবর্জনা বহনকারী বেলুন পাঠানোর জবাবে লাউডস্পিকার বাজানো শুরু করেছে।
দুই দেশের বেসামরিক সীমান্তে দক্ষিণ কোরিয়া শক্তিশালী ২৪ পাউয়ারের স্পিকার ছাড়ে দক্ষিণ কোরিয়া। এটার শব্দ উত্তর কোরিয়ার ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই লাইডস্পিকার সম্প্রচারকে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের সবচেয়ে কার্যকর রূপ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
কিম রবিবার (৯ জুন) রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতির একটি সূচনা করবে।’
উত্তর কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক সংবাদ এবং কে-পপের প্রচার উভয়ই নিষিদ্ধ।
এর আগে মে মাস থেকে ময়লাবাহী বেলুন দক্ষিণের দিকে পাঠানো শুরু করে পিয়ংইয়ং। দেশটি দাবি করে আসছে, দক্ষিণ কোরীয় অ্যাক্টিভিস্টরা উত্তর-বিরোধী লিফলেট প্রচার করায় তার জবাবে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা।
১৯৫০-এর দশকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের সময় থেকেই উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণার অংশ হিসেবে বেলুন ব্যবহার করে এসেছে। তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে উত্তর কোরিয়াবিরোধী প্রোপ্যাগান্ডামূলক লিফলেট পাঠানোকে অপরাধ ঘোষণা করে একটি আইন পাশ করে দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৮ মে থেকে এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার সীমানায় ১ হাজার ৬০টির মতো বেলুন পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এদিকে গত সপ্তাহে প্রতিবেশী দেশে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি বেলুনে করে ১৫ টন ময়লা পাঠানোর দাবি করে পিয়ংইয়ং।
মন্তব্য করুন: