রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২০শে বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত
  • মহাসমাবেশ থেকে হেফাজতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
  • চাঁদপুরে ২ শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
  • আরও ১ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ
  • সরকারের হস্তক্ষেপ না থাকায় গণমাধ্যম সূচকে ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ
  • শরীয়তপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি মিছিল
  • করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে হবে নির্বাচিত সংসদ থেকে
  • আ. লীগ নিষিদ্ধসহ ১২ দফা দাবি হেফাজতের
  • সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন কানাডার বাণিজ্য প্রতিনিধি
  • আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয় সন্ত্রাসী সংগঠন

ইউরোপ যখন ডানে, যুক্তরাজ্য কেন মধ্য–বামে

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৩

সদ্য অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ জয় দেখল যুক্তরাজ্য। দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটাররা মধ্য-বাম দলটির হাতে এমন সময় শাসনক্ষমতা অর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন, যখন প্রায় ইউরোপজুড়েই ডানপন্থীদের জয়জয়কার।

গত মাসে ইউরোপের নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, কট্টর ডানপন্থী ও অতি রক্ষণশীল দলগুলো থেকে রেকর্ডসংখ্যক আইনপ্রণেতা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়েছেন। এই ফলাফলে এমন বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ আকস্মিকভাবে তাঁর দেশে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। গত সপ্তাহে এ নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটে জিতেছে অতি ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি পার্টি।

গত সপ্তাহে অতিডান আইনপ্রণেতাদের সমন্বয়ে সরকার গঠিত হয়েছে নেদারল্যান্ডসে। আবার ফ্যাসিবাদী যুদ্ধকালীন নেতা বেনিতো মুসোলিনির পর ইতালি এখন সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থী নেতার শাসনাধীন। নির্বাচনের এমন ফলাফল ও শাসনকার্যে জনতুষ্টিবাদী ডানপন্থীদের ভবিষ্যৎ ইউরোপের দেশগুলোতে এখন আর বিস্ময়ের কিছু নয়।

লোকরঞ্জনবাদীদের এ উত্থানের পেছনে আছে অনেক কারণ। কিছু দেশে তা অনন্য। তবে ব্যাপক অর্থে বলতে গেলে, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ মন্থর অর্থনীতি, ব্যাপক অভিবাসন ও অংশত জিরো কার্বন নিঃসরণের কারণে সৃষ্ট জ্বালানির উচ্চ মূল্যে ভুগছে। দেশগুলোর এ দুর্দশার জন্য ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) প্রায়ই দায়ী করে থাকেন জনতুষ্টিবাদী রাজনীতিকেরা। তাঁরা এ জোট থেকে দেশকে বিচ্ছিন্ন করার (ইউরোস্কেপটিক) পক্ষপাতী।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার (ব্রেক্সিট) আহ্বানের জোয়ার ওঠায় রীতিমতো গণভোট আয়োজন করতে হয়েছে যুক্তরাজ্যে। তাহলে সেই দেশের নির্বাচনী ফলাফলে কেন ইউরোপের অন্য দেশেগুলোর বিপরীত চিত্র—উঠেছে এমন প্রশ্ন।

যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে লেবার দলের নিরঙ্কুশ জয় সত্ত্বেও ফলাফল থেকে এটি স্পষ্ট যে দেশটিতে ডানপন্থীদের নিঃশেষ হওয়ার দেরি আছে। কনজারভেটিভ পার্টি (টোরি দল) ভোটের পর দুঃস্বপ্নের রাত কাটালেও ফলাফলে দেখা গেছে, প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফলই করেছে তারা। নির্বাচনী প্রচার চলাকালে একাধিক জনমত জরিপে আভাস দেওয়া হয়, ক্ষমতাসীন দলটি ১০০ আসনের কম পাবে। তবে তা হয়নি।

জরিপের আভাস ছাপিয়ে গেছে জনতুষ্টিবাদী আরেক ডানপন্থী দল রিফর্ম ইউকে। এটির নেতৃত্বে রয়েছেন একসময়ের কনজারভেটিভ দলের নেতা নাইজেল ফারাজ। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বের জন্য বর্তমানে বিশেষ পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি। আগামী মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ট্রাম্প। এর আগে কয়েক দশক নাইজেল ইইউর সদস্য হিসেবে যুক্তরাজ্যের থাকার বিরোধিতা করে এসেছেন। দেশটির জন্য ব্রেক্সিট সফল করার কৃতিত্বের ভাগীদার তিনি।

যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে নাইজেল ফারাজের ব্যাপক প্রভাব ও সাফল্য থাকার পরও পার্লামেন্টে তাঁর কোনো আসন ছিল না। এবার পার্লামেন্টের একটি আসনেই তিনি শুধু জয় পাননি; বরং তাঁর সমর্থক আইনপ্রণেতাদের একটি ছোট দলও পাশে পাচ্ছেন। তাঁরা লেবার নেতা কিয়ার স্টারমারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে রীতিমতো তৈরি হয়ে আছেন। স্টারমারের লেবার দলের তিন অঙ্কের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছে দৃশ্যত তাঁদের তুচ্ছ মনে হতে পারে; কিন্তু ফারাজ যে রক্ষণশীল কনজারভেটিভ দলের ভবিষ্যৎ নির্দেশনার বিতর্কে প্রভাব রাখবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দলটি যাতে আরও ডানে মোড় নেয়, সম্ভবত সেই জোর চেষ্টা চালাবেন তিনি।

ডানপন্থীদের মধ্যে ফারাজ আগে যে ভাঙন তৈরি করেছেন, প্রকৃতপক্ষে সেটিই এবারের নির্বাচনে স্টারমারের মধ্য–বাম লেবার দলের নিরঙ্কুশ জয়ে সহায়তা করেছে। লেবার জিতেছে এমন অনেক আসনে ভালো করছে রিফর্ম। পার্লামেন্টে কট্টর ডানপন্থী দলটিকে হেলাফেলা করা শুধু যে অসম্ভবই হবে তা নয়; সহজেই নিজেদের প্রভাব আরও বাড়তে থাকাও হয়তো দেখবে তারা।

ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো এ ধরনের সমস্যার অনেকগুলোরই সম্মুখীন যুক্তরাজ্যও। স্টারমার যদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হোঁচট খান, তবে গণ–আকাঙ্ক্ষা মুঠোয় আনার সব সম্ভাবনা আছে জনপ্রিয় ডানপন্থীদের; যেমনটা ঘটেছে ইউরোপের অন্যান্য দেশে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর