রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২০শে বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত
  • মহাসমাবেশ থেকে হেফাজতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
  • চাঁদপুরে ২ শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
  • আরও ১ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ
  • সরকারের হস্তক্ষেপ না থাকায় গণমাধ্যম সূচকে ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ
  • শরীয়তপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি মিছিল
  • করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে হবে নির্বাচিত সংসদ থেকে
  • আ. লীগ নিষিদ্ধসহ ১২ দফা দাবি হেফাজতের
  • সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন কানাডার বাণিজ্য প্রতিনিধি
  • আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয় সন্ত্রাসী সংগঠন

পহেলা বৈশাখ ঘিরে নাগালের বাইরে ইলিশের দাম

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২১

পয়লা বৈশাখ মানেই পান্তা-ইলিশ, আর পান্তা-ইলিশ মানেই যেন বাঙালির এক অন্যরকম রসনা ও রীতি। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারও বৈশাখে সেই ইলিশ যেন হয়ে উঠেছে মধ্যবিত্তের জন্য এক ফাঁদ। ইলিশের দামে এখন বৈশাখী উত্তাপ।

এমনিতেই ইলিশের দাম চড়া। আর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তা যেন ক্রেতার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। যে ইলিশ যত বড়, তার দর তত বেশি। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাজারে হঠাৎ করেই কয়েকগুণ দাম বেড়েছে ইলিশের।

রাজধানীর প্রায় বড় বাজারগুলোতেই ইলিশের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। রবিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বনানী, বাড্ডা, নিউমার্কেট, মিরপুর ও উত্তরাসহ বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। দেখা যায়, ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম উঠেছে মানভেদে ২,২০০ থেকে ৩,০০০ টাকায়। আর মাঝারি আকৃতির ইলিশের কেজি ২৮০০-৩০০০ টাকার নিচে মিলছে না। আর সবচেয়ে বড় আকৃতির ইলিশ মাছ ৩৫০০-৩৭০০ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে।

ইলিশ কিনতে আসা অনেকেই হতাশার সুরে বলছেন, পহেলা বৈশাখকে ঘিরে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ইলিশের দাম। চলতি সপ্তাহে ইলিশের চড়া দাম দেখে বিশ্বাস করতেই কষ্ট হয় যে আমাদের দেশের মাছ। কিন্তু ইলিশের দামের এ অবস্থা কেন? গত পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে উৎপাদনও বাড়ছে ইলিশের। কিন্তু উচ্চমূল্যের কারণে দেশের এই মাছটির স্বাদ নিতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈশাখ উপলক্ষ্যে হঠাৎ করেই ইলিশের চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। কারণ, মৌসুম না থাকায় সাগরে বা নদীতে খুব বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে না। আবার সব নিষিদ্ধ মৌসুম হওয়ার কারণে সব নদীতে জেলেরা জাল ফেলতে পারছেন না। ফলে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ভোক্তারা এজন্য অসাধু চক্রের কারসাজিকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ইলিশের দাম বাড়াচ্ছে। তা না হলে ইলিশ মাছের এত দাম কেন হবে?

মিরপুর-১ এর বাসিন্দা সিকদার আনজাবিন রহমান বলেন, বৈশাখে পান্তা ইলিশ খাবে-বাচ্চাদের এমন আবদারে ইলিশ কিনতে এসে বিব্রত না বিরক্ত হচ্ছি। যে বাজেট করে বাসা থেকে বের হয়েছি, তাতে ইলিশ মাছ কিনতে পারছি না। বাচ্চাদের কি বলে যে শান্তনা দিব। ওদের কাছে লজ্জাই পেতে হবে।

নুরুল হাবিব নামের এক বিক্রেতা বলেন, এক সময় ইলিশ মাছ খাওয়ার খুব প্রচলন ছিল। এখন তার অনেকটাই ভাটা পড়েছে। তারপরও ভালোই বিক্রি হচ্ছে। একেবারে খারাপও না আবার বেশি ভালোও না। আসলে এই সময় মানুষ একটু ভালো ইলিশ খেতে চায়। কিন্তু আমরা কমদামে তেমন মাছ পাচ্ছি না। পাইকারি দামই অনেক বেশি, তাই বিক্রি করতেও আমাদের বেশি দাম রাখতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদী বা সাগর থেকে ইলিশ আহরণের পর ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে কয়েকটি হাত ঘুরে। এসময়ই মাছটির দাম বেড়ে যায়। যে ইলিশ যত বড়, তার দর তত বেশি। এছাড়া, অসাধু ব্যবসায়ীরা মজুত করেও ইলিশের দাম বাড়িয়ে দেয়। তবে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ইলিশ পাচার হয় কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।

উল্লেখ্য, দেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ ইলিশ। জিডিপিতে ইলিশের অবদান প্রায় ১ শতাংশ। মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত এক দশকে ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে প্রতি বছর উৎপাদন হচ্ছে ৫ লাখ টনের বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ১৭ হাজার টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ লাখ ৫০ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৬৭ হাজার টন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৭১ হাজার টন।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর