প্রকাশিত:
১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:২২
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম (অব.) বলেছেন, আপনারা প্রায় ৯ মাস ক্ষমতায় আছেন। মনে হচ্ছে, ক্ষমতা ভোগ করছেন। জনগণের সমস্যা নিরসনে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নেই।
৫ আগস্টের পর স্বৈরাচারের গুণ্ডাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণ যে মামলাগুলো করেছে বা অভিযোগ দাখিল করেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও পর্যন্ত উক্ত মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃশ্যতঃ কারো বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে নাই। আপনারা কি দেশের জন্য কাজ করছেন? না আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য অপেক্ষা করছেন?
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও কিছু কিছু জায়গায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদেরকে ভারতের দালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত হবে না বা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়াও সঠিক হবে না। আমি এখানে সাবধান ও হুঁশিয়ার করে বলতে চাই যে, দেশ রক্তপাতের দিকে এগোচ্ছে।
হয়ত আপনাদেরকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। পাপ কিন্তু বাপকেও ছাড়ে না। সুতরাং সময় থাকতেই সঠিক পদক্ষেপ নেন। জনগণকে শান্তিতে, স্বস্তিতে বসবাস করতে দিন। চাকরি হয়তঃ দিতে পারলেন না, কিন্তু শান্তির প্রয়োজন। শুধু মিষ্টি কথায় ভাষণ দিয়ে দেশ চালানো যাবে না বা জনগণের সমস্যার সমাধান হবে না।
শনিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে এক যোগদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।এদিন লে. জেনারেল (অব.) ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর নেতৃত্বে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা-আমলাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপিতে যোগ দেন।
এলডিপি মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম (অব.)।
অলি আহমদ বলেন, বর্তমানে সমাজের কি অবস্থা তা আপনাদের জানা উচিত। অনেকে অবৈধ টাকার কাছে নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছে। বিভিন্ন তদবিরের জন্য সারাদিন সচিবালয়ে সময় কাটাচ্ছে। রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করেছে। অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে। নিজেদের জন্য আলিশান অফিস ভাড়া নিচ্ছে। এই অবস্থায় জনগণ চুপ থাকলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এলডিপি হচ্ছে, এই জাতির মুক্তির সনদ, ন্যায় ও সমতা নিশ্চিত করার একটি পার্টি। সঠিক সিদ্ধান্ত নেন, দেশকে রক্ষা করেন। এ ব্যাপারে যুব সমাজকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশপ্রেমিক ও জনবান্ধব ব্যবসায়ী; সরকারের উচিত দেশপ্রেমিক এবং জনবান্ধব ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলি শোনা, সমাধান দেওয়া এবং তাদেরকে বিভিন্নভাবে ন্যায়সঙ্গত সহযোগিতা করা।
স্বৈরাচারী ও খুনি হাসিনার দোসরেরা ঝটিকা মিছিল করে, দেশকে অস্থিতিশীল করছে। বিভিন্ন জায়গায় খুনাখুনি ও ডাকাতি করছে। সরকার নিরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু জনগণ মনে করে, এই ধরনের কর্মকাণ্ডে সরকারের ইন্দন রয়েছে, কারণ তারা জনগণের কাছে, তাদের ক্ষমতায় থাকার গুরুত্ব অপরিহার্য বলে প্রমাণ করতে চায়। বস্তুতঃ বর্তমানে ফ্রিস্টাইলে দেশ চলছে।
তিনি আরও বলেন, যুব ও শিক্ষিত সমাজকে জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করতে হবে। আপনারা হলেন, এই জাতির ভবিষ্যৎ। নীতি নৈতিকতা, সততা এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে, দেশকে সঠিক পথে রাখার জন্য বা সঠিক পথে পরিচালনার জন্য গঠনমূলক সমালোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।
তবে অশোভন ব্যবহার করা কখনও কাম্য নয়। অভিজ্ঞতার আলোকে আমার পরামর্শ হল, সরকারি ও আধা সরকারি কর্মচারীদের ভারতে প্রশিক্ষণ নেওয়া বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণের জন্য ইউএনডিপি এর মাধ্যমে বিদেশ থেকে দক্ষ প্রশিক্ষক এনে, দেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে বা প্রয়োজনে ভারত ব্যাতীত অন্য কোন দেশে পাঠানো যেতে পারে।
মন্তব্য করুন: