প্রকাশিত:
৩ মে ২০২৫, ১৫:০২
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে সখিপুর থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে মিছিল ও পোস্টার লাগানো হয়েছে। সংগঠনটির ঝটিকা মিছিলের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরদিন ভেদরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পাল্টা মিছিল করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ১১টা থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি মিছিলের এই ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। সখীপুরের সবকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
স্থানীয় এবং থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ এর অঙ্গ সংগঠেনের নেতাকর্মীরা। ওই মিছিলটি কয়েকটি ফেসবুকআইডি থেকে লাইভ করা হয়। এর মধ্যে মনির হোসেন নামের একটি আইডি থেকে লাইভ করা ঝটিকা মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরদিন শুক্রবার দুপুর থেকে সখীপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নে পাল্টা মিছিল করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মিছিলের প্রতিবাদে সখীপুর স্কুলমাঠে শনিবার সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
এ বিষয়ে সখিপুর থানা বিএনপি আহবায়ক আব্দুল হামিদ সরদার বলেন, আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে বিএনপির পক্ষ থেকে পুরো সখিপুর থানার প্রতিটি ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। শনিবার সখিপুর থানা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জনসভার ডাক দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর সখিপুরে দলীয় কার্যক্রম ছিল অনেকটাই নিস্ক্রিয়। এর মধ্যে হঠাৎ করে রাতের অন্ধকারে একটি মিছিল বের করা হয় এবং বিভিন্ন জায়গায় দলীয় স্লোগানসংবলিত পোস্টার লাগানো হয়। তবে মিছিলে কোনো শীর্ষস্থানীয় নেতাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশের মুখ ছিল মুখোশ বা কাপড়ে ঢাকা। পোস্টারগুলোতেও কারও নাম বা ছবি ছিল না, ছিল শুধু সাধারণ দলীয় বার্তা ও স্লোগান।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন আইডি থেকে ঝটিকা মিছিলের ফেসবুক লাইভ করা হলেও মনির হোসেন নামের একটি আইডির লাইভটি ছড়িয়ে পড়েছে। মনির হোসেন সখিপুর থানা দক্ষিণ তারাবনিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।
সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওবায়েদুল হক শনিবার সকালে ইত্তেফাককে বলেন, ফেসবুক পোস্টে মিছিলটি দেখা গেছে সেটি শরীয়তপুর এবং চাঁদপুর সীমানা সংলগ্ন এলাকা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মিছিলটি চাঁদপুরের ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নে। তবে সখীপুর থানার কিছু লোকজন সেই মিছিলে থাকতে পরে। ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সখিপুর থানার প্রতিটি ইউনিয়নে অভিযান চলছে। গত রাতে ২০ থেকে ২৫ বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অভিযান চলমান আছে।
প্রসঙ্গত এর আগে গত ২০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে শরীয়তপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল করেছেন। সদর উপজেলার জয়নগর এলাকায় ওই মিছিল করা হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর শরীয়তপুরে এটিই প্রথম কোনো কর্মসূচি পালিত হয়। পরে মিছিলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মশাল নিয়ে মিছিল করছেন কিছু মানুষ। তাদের মুখে মাস্ক পরা। তারা শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মন্তব্য করুন: