প্রকাশিত:
১৫ জুন ২০২৫, ১৬:৩১
লর্ডসের ঐতিহাসিক মঞ্চে টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম রোমাঞ্চকর ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জয়ের মাধ্যমে ২৭ বছরের আন্তর্জাতিক শিরোপা-খরা কাটাল প্রোটিয়ারা। তাদের আগের একমাত্র আইসিসি ট্রফি ছিল ১৯৯৮ সালের আইসিসি নকআউট, যা পরবর্তীতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নামে পরিচিত।
এই অসাধারণ জয় বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট মহলে উচ্ছ্বাস ও প্রশংসার জোয়ার তুলেছে।
টেন্ডুলকার থেকে শুরু করে ডি ভিলিয়ার্স, সাঙ্গাকারা থেকে গিবস—সবাই প্রশংসায় ভাসিয়েছেন এই প্রোটিয়া দলকে।
ভারতের কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট তার জাদু ছড়িয়েই চলেছে। এমন ফাইনাল যেখানে প্রতিটি সেশনে আলাদা গল্প ছিল, আর সেই ঝড়ের মধ্যেই শান্ত থেকে ম্যাচ শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। চতুর্থ ইনিংসে মারক্রামের ধৈর্য্য আর বাভুমার দৃঢ়তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
এক শতক যা ইতিহাস হয়ে থাকবে, এক জুটি যা আশাকে ইতিহাসে রূপান্তরিত করেছে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে অভিনন্দন!’
চতুর্থ ইনিংসে প্রোটিয়াদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৮২ রান, যা লর্ডসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়া। সেই লক্ষ্যে দলের হাল ধরে রেখেছিলেন এইডেন মারক্রাম, তার ১৩৬ রানের ইনিংস এই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। অধিনায়ক বাভুমা খেলেছেন এক সাহসী ৬৬ রানের ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়ান পেস আক্রমণের সামনে তাদের দৃড়তায় মূলত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স লেখেন, ‘দারুণ জয়! মারক্রামের সেই সেঞ্চুরি এবং বাভুমার নেতৃত্ব একসাথে অসাধারণ এক গল্প রচনা করেছে। তাদেরকে স্যালুট জানাই। আমার দুই ছেলেকে নিয়ে এই মুহূর্ত উপভোগ করাটা আজীবনের স্মৃতি হয়ে থাকবে।’
লঙ্কান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা শুধু স্কিলেই নয়, মানসিকতায়ও অস্ট্রেলিয়াকে ছাড়িয়ে গেছে।
টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বে তারা দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে লক্ষ্য, আত্মবিশ্বাস ও আবেগ একসাথে ইতিহাস গড়ে।’
সাবেক প্রোটিয়া ওপেনার হার্শেল গিবস জানান, টস থেকে শুরু করে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। দারুণ খেলেছে দল। উদযাপন উপভোগ করো।
ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং লিখেছেন, ‘২৭ বছরের অপেক্ষা শেষে ২০২৫ সালের দলটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিল। টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে বড় আত্মমর্যাদা আর মানসিক দৃঢ়তার পরীক্ষা আর কিছুই হতে পারে না। মারক্রামের সেঞ্চুরি ছিল নিখাদ। রাবাদা, ইয়ানসেন ও এনগিডির বোলিং আক্রমণ ছিল অবিশ্বাস্য। আর বাভুমার নেতৃত্ব ছিল শান্ত ও সাহসী।’
এই জয়ের মাধ্যমে অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকা মুছে দিল ‘চোকার’ তকমা। বহু বছর ধরে আইসিসির বড় টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার গল্প লিখলেও এবার তারা সব সমালোচনার জবাব দিয়েছে মাঠের পারফরম্যান্সে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট এখন টেম্বা বাভুমার হাতে।
মন্তব্য করুন: