প্রকাশিত:
১৬ জুন ২০২৫, ১৭:২৩
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে রবিবার (১৫ জুন) রাতে ভিকটিমের প্রতিবেশী মো. জুনেল মিয়াকে (৩৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডের আশপাশের এলাকা থেকে ভিকটিমের বোরকা, স্কুলব্যাগ, বই এবং একটি জুতা উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার (১৬ জুন) মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
পুলিশ জানায়, গত ১২ জুন সকাল ৭টার দিকে পাশের সিংগুর গ্রামে প্রাইভেট পড়তে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি নাফিস্তা জান্নাত আনজুম (১৫)। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ঘটনার দুই দিন পর, ১৪ জুন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে বাড়ির পাশের একটি ছড়ার পাশে দুর্গন্ধ পেয়ে তার ভাই ও মামা অর্ধগলিত মরদেহটি খুঁজে পান। পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায় এবং পরদিন একটি হত্যা মামলা রুজু করে।
ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, কুলাউড়া সার্কেলের (অতিঃ দায়িত্বে) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ গোলম আপ্সার, পুলিশ পুরিদর্শক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যসহ একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুলাউড়া থানার অফিসারদের নিয়ে কয়েকটি বিশেষ টিম গঠন করে আশপাশে ব্যাপক তল্লাশি করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে একটি ঝোপ থেকে ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ, বই এবং একটি জুতা উদ্ধার করা হয়।
আমরা শুধু স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিশেষ ৬টি টিম গঠন করি। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, আলামত উদ্ধারের জায়গা এবং নারীঘটিত কিছু বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা দেখে সন্দেহ হওয়ায় আমরা জুনেল মিয়াকে আটক করি। পরবর্তীতে তার মোবাইল চেক করে পর্ন সাইটে ব্রাউজিংয়ের তথ্য দেখে আমাদের সন্দেহ আরো বাড়ে। পরবর্তীতে আমরা তাকে দুপুর থেকে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি পুলিশ সুপারের সামনে রাত ১২টার দিকে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।
আসামি জানান, ভিকটিম তার বাড়ির সামনের একটি রাস্তা দিয়ে প্রায়ই স্কুল ও প্রাইভেটে আসা যাওয়া করত।
সেই সুবাদে জুনেল মিয়া ভিকটিমের সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে ঘটনার দিন গত ১২জুন ভিকটিম পাশের গ্রামে প্রাইভেট পড়া শেষে আসামীর বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার সময় আসামি ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তার পিছু নেয়। ভিকটিম এড়িয়ে যেতে চাইলে জুনেল মিয়া ভিকটিমকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেন। তখন ভিকটিম চিৎকার করলে জুনেল মিয়া তার হাত দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে ধরলে ভিকটিম ঘটনাস্থল কিরিম শাহ মাজারের মধ্যের রাস্তায় অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর ভিকটিমকে মোকামসংলগ্ন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়ার পাড়ে ঝোপে ফেলে রাখেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম আপছার, কুলাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য।
মন্তব্য করুন: